ভিপিএন (VPN) ও এর কাজ

  VPN

ভিপিএন () ও এর কাজ

ভিপিএন (VPN) এর পূর্ণরূপ হলো Virtual Private Network। কম্পিউটার ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা মূলত অঞ্চলভিত্তিক ব্লক করা সাইটগুলোতে প্রবেশ করতে অথবা তথ্যের গোপনীয়তা রক্ষার্থে এবং সেনসিটিভ কন্টেন্ট ব্রাউজ করার সময় নিজেকে ট্রেস বা চিহ্নিত করা থেকে বাঁচাতেই ভিপিএন ব্যবহার করে থাকে। ভিপিএন ইন্টারনেটে আপনার ও অন্য একটি নেটওয়ার্কের মাঝে সিকিউর বা নিরাপদ কানেকশন তৈরী করে দেয়।  ভিপিএন এর ব্যবহার বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়। মূলত ভিপিএন তৈরী করা হয়েছিল বাণিজ্যিক প্রাইভেট নেটওয়ার্কগুলোকে নিরাপদে সংযুক্ত করার জন্য। প্রায় সব অপারেটিং সিস্টেমেই বিল্ট ইন VPN সাপোর্ট আছে। ভিপিএন আপনার নেটওয়ার্ক ট্রাফিককে অন্য কোন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ফরোয়ার্ড করে দেয়।

iPhone Cases

ভিপিএন এর কর্মপদ্ধতি

আমরা যখন আমাদের ডিভাইসটিকে ভিপিএনে কানেক্ট করি তখন এটা অন্য কোন একটা কম্পিউটারে বা সার্ভারে নিজেকে সংযুক্ত করে এবং ইন্টারনেটের সাথে যোগাযোগের জন্য একটি গোপন রাস্তা বা সুড়ঙ্গ তৈরি করে। আমাদের ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) তাদের প্রযুক্তির মাধ্যমে এই সুড়ঙ্গের উপস্থিতি বুঝতে পারলেও এর মধ্যে ঢুকতে সক্ষম নয়। যার ফলে আমরা কোন ওয়েব সাইট ব্রাউজ করছি কিংবা কী তথ্য সরবরাহ করছি তা আইএসপি জানতে পারবে না। যদি কোন দেশে বা আইএসপিতে কোন নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট ব্লক করা থাকে সেই সাইটটিও ভিপিএন ব্যবহার করে ব্রাউজ করা সম্ভব। আর এই সব ডেটা ভিপিএন ব্যবহারের সময় এনক্রিপ্টেড হয়ে যায়।

ভিপিএন এর ব্যবহার

ব্যক্তিগত তথ্যের নিরাপত্তা

পাবলিক প্লেসে ফ্রি ওয়াই-ফাই হটস্পট ব্যবহার করার ফলে আপনার ব্রাউজিং ডেটা একই নেটওয়ার্কে থাকা অন্যান্য ব্যবহারকারীরা সনাক্ত করতে পারে যদি সে এই বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়। এক্ষেত্রে ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (VPN) দিয়ে কানেক্ট করলে আপনার ওয়াইফাই সংযোগে কেউ আড়ি পাতলে কিংবা আপনার আইএসপি নিজেও শুধু একটা প্রাইভেট নেটওয়ার্কই দেখবে। এর মাধ্যমে আপনি যে সব ডেটা পাস করছেন বা কোন ওয়েবসাইট ব্রাউজ করছেন সেসবের নাগাল পাবে না।

জিওরেস্ট্রিক্টেড কন্টেন্ট বা সাইট ব্রাউজ

কোন কোন ওয়েবসাইট বা কন্টেন্ট একটি নির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক থাকে অর্থাৎ কেবল মাত্র একটি নির্দিষ্ট দেশ বা ভৌগোলিক অঞ্চলের ব্যবহারকারীরাই তা দেখতে পারে। ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (VPN) এর মাধ্যমে ভিডিও ও অডিও স্ট্রিমিং সাইটগুলোতে নির্দিষ্ট দেশের জন্য স্পেসিফিক কন্টেন্টগুলো যে কোন দেশ থেকেই ব্রাউজ করতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ স্পটিফাই সাইট থেকে বাংলাদেশে বসে আপনি গান শুনা সম্ভব নয়। কিন্তু চাইলেই যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোন দেশ যেখানে স্পটিফাই এর সার্ভিস আছে সেসব দেশের আইপিযুক্ত সার্ভারে ভিপিএন দিয়ে কানেক্ট করে আপনিও বাংলাদেশে বসেই স্পটিফাই সার্ভিস  ব্যবহার করতে পারবেন।

নিজের প্রকৃত অবস্থান বা ঠিকানা গোপন করতে

আপনার প্রকৃত লোকেশন বা অবস্থান গোপন রেখে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের ট্র্যাকিং থেকে বাঁচতে আপনি যদি  ইন্টারনেট ব্যবহার করতে চান তাহলে ভিপিএন এর মাধ্যমে আপনি সেই সুবিধা পাবেন। যেমন চীনে ফেসবুকের মত অনেক সাইট সরকারীভাবে বন্ধ করে রাখা আছে। যার কারণে চীনারা ভিপিএন ব্যবহার করেই প্রয়োজন পড়লে সেসব সাইট ব্রাউজ করে নিজেদের চাহিদা পূরণ করে থাকে।

টরেন্ট সফট্‌ওয়্যার ব্যবহারের সময় গোপনীয়তা রক্ষার্থে

VPN ব্যবহার করে টরেন্ট থেকে ফাইল নামানোর ক্ষেত্রে ট্রেসিং এড়ানো সম্ভব। আপনি যদি লিগ্যাল টরেন্ট ও ডাউনলোড করেন তাহলেও বেশি ট্রাফিকের ভয়ে আপনার আইএসপি আপনার কানেকশন স্লো করে দিতে পারে। সেক্ষেত্রে ভিপিএন এর মাধ্যমে আপনি ট্রেস থেকে বাঁচতে পারেন।

ভিপিএন এর নিরাপত্তা

ইন্টারনেট ও নেটওয়ার্কের জগতে নিরাপত্তার ব্যাপারটি কঠিন। সম্পূর্ণ নিরাপদ নয় কিছুই। বাজারের জনপ্রিয় VPN সেবাদাতাগুলোর প্রতি অনেকেরই আস্থা আছে। আবার নিজের তৈরি ভিপিএন নেটওয়ার্ক মন্দ নয়। অসাধু বা কম্প্রোমাইজড VPN নেটওয়ার্ক থেকে ডেটা বেহাত হওয়ার ঝুঁকি থেকেই যায়। সুতরাং এক্ষে্ত্রে অত্যন্ত বুঝে শুনে এগোতে হবে।

  Afridrilles

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন