টাকা আয় করুন গুগল এ্যাডসেন্স (Google AdSense) এর মাধ্যমে

টাকা আয় করুন গুগল এ্যাডসেন্স (Google AdSense) এর মাধ্যমে

বর্তমানে অনলাইন আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস হচ্ছে গুগল এ্যাডসেন্স, (Google AdSense)। আপনার যদি একটি ব্লগ সাইট বা ওয়েবসাইট থাকে অথবা কোন ইউটিউব চ্যানেল থাকে তাহলে আপনি গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে ভাল একটি উপার্জন (online earning) করতে পারেন। অনেকে আছেন যারা গুগল এডসেন্স দিয়ে নিজে চলছেন এমনকি কোন প্রতিষ্ঠান খুলে দশ বারো জন কর্মী পরিচালনা করছেন। 

আমাদের দেশে এমন অনেকে আছেন যাদের ব্লগ বা ওয়েবসাইট আছে, কিন্তুে এখনও সঠিক গাইডলাইনের অভাবে তা এখনও গুগল এডসেন্স দ্বারা এপ্রুভ করাতে পারেন নাই। আমাদের আজকের এই পোষ্ট থেকে জানতে পারবেন কিভাবে গুগল এডসেন্স এপ্রুভ করাতে হয় এবং তা থেকে ভাল মানের একটি উপার্জন করাতে হয়।


গুগল এডসেন্স কি?


গুগল এডসেন্স হচ্ছে গুগলের একটি এডভার্টাইজিং প্লাটফর্ম। এটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ একটি এডভার্টাইজিং প্লাটফর্ম। বিশ্বের অনেক ব্লগার ও ওয়েবসাইট বিল্ডাররা তাদের ব্লগ বা ওয়েবসাইট এর মাধ্যমে মনেটাইজ করে অর্থ উপার্জন করে থাকে।


গুগল এডসেন্স কিভাবে কাজ করে?


এর জন্য আপনাকে গুগল এডসেন্স এর একজন পাবলিশার হতে হবে এবং আপনার ওয়েবসাইট/ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে গুগলের বিজ্ঞাপনগুলো পাবলিশ করতে হবে। কেউ যদি এই বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে তাহলে আপনি তা থেকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা পাবেন। এছাড়াও আপনার সাইটে বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্যও আপনি একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ উপার্জন করতে পারেন। আর গুগল এ্যাডওয়ার্ড এর মাধ্যমে গুগল বিজ্ঞাপনদাতাদের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন সংগ্রহ করে থাকে।


গুগল এ্যাডসেন্স এর জন্য যা যা লাগবে

এখন আমাদের জানতে হবে একটি এডসেন্স একাউন্টের জন্য কী কী লাগবে। সর্বপ্রথম আপনার যা লাগবে তা হচ্ছে একটি ব্লগ। ব্লগটি হতে হবে অবশ্যই ইনফরমেটিভ ওয়েবসাইট অর্থাৎ যেখানে আপনি বিভিন্ন প্রকার ইনফর্মেশন কালেক্ট করে দিবেন এবং ভিজিটররা আপনার ওয়েবসাইটে সেই ইনফরমেশনগুলো খুঁজতে আসবে এবং খুঁজতে এসে এড এর উপর ক্লিক করলে তখনই আপনি টাকা পাবেন। সুতরাং গুগল অ্যাডসেন্স এর জন্য যা গুরুত্বপূর্ণ  তা হচ্ছে একটি ওয়েবসাইট। আব দ্বিতীয় জিনিষটি হচ্ছে একটি ইমেইল এড্রেস।

গুগল এ্যাডসেন্স এর এপ্রোভাল যেভাবে পাবেন

গুগল অ্যাডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার জন্য প্রথমত আমাদের যা লাগবে তা হচ্ছে একটি দৃষ্টিনন্দন এবং ইনফরমেটিভ ওয়েবসাইট। আমরা আগেই বলেছি, আপনার ওয়েবসাইট যদি তথ্যবহুল না হয় এবং সেখান থেকে যদি ভিজিটররা কোন উপকার লাভ না করে তাহলে সেটা কেউই পছন্দ করবে না। আপনার ওয়েবসাইট যদি দৃষ্টিনন্দন বা ইনফরমেটিভ হয় তাহলে ভিজিটররা আপনার ওয়েবসাইটে তাদের তথ্য খুঁজতে আসবে যার ফলে ওয়েবসাইটটি গুগলের কাছেও পছন্দনীয় হবে। গুগল যখন মনে করবে আপনার ওয়েবসাইটটি সব দিক দিয়ে তাদের স্ট্যান্ডার্ড  মানে পৌছেছে তখেই তারা সেখানে গুগল এ্যাডসেন্স ব্যবহার করার অনুমতি দেবে।

এছাড়া আপনার ওয়েবসাইটে কিছু পেজ অবশ্যই থাকতে হবে। এগুলো হচ্ছে, “অ্যাবাউট পেজ” যেখানে আপনার সম্পূর্ণ তথ্য থাকবে। এছাড়া থাকবে “প্রাইভেসি পলিসি” পেজ। যেখানে আপনার ব্লগ কিভাবে ব্যবহার করতে হবে, ব্লগে কি নিষিদ্ধ কি কি করা যাবে এবং কোন ডাউনলোড লিংক আছে কিনা এ সমস্ত বিষয়াদি থাকবে। আরও থাকবে একটি “কন্টাক্ট আজ” পেজ। যেখানে আপনার সাথে যোগাযোগের জন্য সকল তথ্য থাকবে। যে কোন ইনফরমেশন জন্য আপনাকে নক করতে পারবে। আপনার ওয়েবসাইটে/ব্লগে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ টা কনটেন্ট থাকতে হবে। এছাড়া আপনার ওয়েবসাইটে নেভিগেশন প্যানেল থাকতে হবে। আরও থাকতে হবে দৃষ্টিনন্দন সাইডবার এবং থাকবে সাদাসিদা ডিজাইন। আর কালার কম্বিনেশন খুব ভালো ভাবে খেয়াল রাখতে হবে।

আপনার ব্লগে এ্যাড ব্যবহার

গুগল এ্যাডসেন্স যখন আপনাকে এ্যাড ব্যবহার করার অনুমতি দেবে, তখন গুগল এডসেন্সের ড্যাশ বোর্ডে গিয়ে বিভিন্ন সাইজের এবং বিভিন্ন ক্যাটাগরির অ্যাড আপনি তৈরী করতে পারবেন। আর যখনই আপনি  বিভিন্ন সাইজ বা ক্যাটাগরির এ্যাড তৈরী করবেন তখন তাৎক্ষণিকভাবে একটি জাভাস্ক্রিপ্ট কোড দেবে যা কপি করে আপনার ব্লগে সাইডবার অথবা পোষ্টের ভিতরে যেখানে যেখানে আপনি প্লেস করবেন ঠিক সেখানে সেখানে গুগল সেই কনটেন্টের ক্যাটাগরির সাথে মিল রেখে এ্যাড শো করাবে।

আপনার গুগল এ্যাডসেন্স একাউন্ট মনিটরিং পদ্ধতি

যখন আপনার গুগল এ্যাডসেন্স একাউন্ট আছে তৈরী হবে তখন তখন আপনি এই একাউন্টটি মনিটরিং করতে পারবেন। আপনার গুগল এ্যাডসেন্স একাউন্ট কে নিয়ন্ত্রন করার জন্য গুগল আপনাকে একটি ড্যাশবোর্ড দেবে। এই একাউন্টে আপনি আপনার জিমেইল অ্যাকাউন্ট এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিন করে তা আপনার মত করে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।আপনার ইচ্ছা হলে যে কোন এড বন্ধ রাখতে পারবেন ইচ্ছা হলে অ্যাড করতে পারবেন। এছাড়াও আপনার গুগল এ্যাডসেন্স একাউন্টে যে কোন ওয়েবসাইট এড করতে পারবেন। এমনকি নির্দিষ্ট কোন ওয়েবসাইটে এড বন্ধ রাখতে পারবেন বা চালু করতে পারবেন, সেটা সম্পূর্ণ আপনার উপর নির্ভর করবে।

আপনার প্রতিদিনের আয় যেভাবে দেখবেন

এটা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ! প্রতিদিন আপনার পেজে কত পেজভিউ হচ্ছে, কত ইম্প্রেশন হচ্ছে, কত টাকা ইনকাম হচ্ছে, সেটা জানার জন্য গুগল এ্যাডসেন্স এর ড্যাশবোর্ডে একটি উইজেট থাকবে। এই উইজেটের মাধ্যমে আপনি ফিল্টারিং করে প্রতিদিন কত টাকা ইনকাম হচ্ছে, প্রতি সপ্তাহে কত টাকা ইনকাম হচ্ছে,  প্রতি 28 দিন কত টাকা ইনকাম হচ্ছে অথবা প্রতি ক্লিক এ কত টাকা পাচ্ছেন যার মানে প্রতি ক্লিকে কত সিপিসি পাচ্ছেন সেটা দেখতে পারবেন। এমনকি প্রতিটি অ্যাড এ কতগুলো ক্লিক পড়ছে, কোন অ্যাড থেকে কত টাকা আসছে সেটাও আপনি দেখতে পারবেন। তাছাড়া কোন অ্যাড এ ইনভ্যালিড ক্লিক হচ্ছে কি না সেটিও আপনি জানতে পারবেন। যখন আপনি দেখবেন আপনার পরিমাণের চেয়ে বেশি ক্লিক পড়ছে তখন বুঝতে হবে কেউ ইচ্ছা করেই আপনার এড এ ক্লিক করছে। তখন আপনি কিছু সময়ের জন্য সেই অ্যাড  কে বন্ধ রাখতে পারেন শুধুমাত্র নিরাপত্তার জন্য। এটি করার জন্য গুগল এ্যাডসেন্স এর একটি ফর্ম আছে। যা পূরণ করে আপনি ইনভ্যালিড ক্লিক প্রতিরোধ করতে পারবেন।

গুগল এ্যাডসেন্সে ব্যাংক একাউন্ট যেভাবে যোগ করবেন

ধরেন গুগল এ্যাডসেন্স থেকে আপনার একাউন্টে টাকা জমা হয়েছে, এখন প্রশ্ন হলো আপনি কীভাবে টাকাটা আপনার নিজের ব্যাংক একাউন্টে নিয়ে আসবেন। এক্ষেত্রে গুগলের নিয়ম হচ্ছে যখন গুগল এ্যাডসেন্স একাউন্টে আপনার কমপক্ষে 100 ডলার জমা হবে তখনই গুগল আপনাকে পেমেন্ট করার জন্য আপনার ব্যাংক ডিটেলস অ্যাড করতে বলবে। তখন আপনি পেমেন্ট সেটিং এ গিয়ে আপনার ব্যাংকের যেসকল ইনফরমেশন গুলো প্রয়োজন তা এড করে দিবেন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রতি মাসের ইনকাম পরের মাসের 21 তারিখে পাঠিয়ে থাকে এবং সে টাকা চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে নির্ধারিত ব্যাংক একাউন্টে সম্পূর্ণভাবে এসে যায়। এব্যাপারে আপনাকে কোন টেনশন করতে হবে না।

إرسال تعليق

أحدث أقدم